সুন্দরীদের সবার ভালো লাগে ইভানেরও ভালো লাগে।

মগ বাজার মোড়ের পাশে একটি বন্ধ দোকানের সামনের সিঁড়িতে বসে আছে ইভান। বসে বসে বৃষ্টি দেখছে। দেখছে জ্যামের কারণে বাসের মধ্যে বসে থাকা মানুষ গুলোকে। কেমন নিরুত্তাপ হয়ে বসে আছে। হাল ছেড়ে দেওয়া ভঙ্গি। হাকলা বৃষ্টিতে সামনে দিয়ে মানুষ গুলোর হেটে যাওয়া দেখছে। কোন কাজ নেই। এভাবে বসে বসে সব কিছু অবজার্ভ করতে খারাপ লাগে না।
শুধু সেই দেখছে এমন না। তাকেও দেখছে। দোকানের সাটারে 'i don't care' টাইপে হেলান দেওয়া ইভানকেও দেখছে বাস থেকে, সামনে দিয়ে যাওয়া মানুষ গুলো। দেখে যে যার গন্তব্যের দিকে চলে যাচ্ছে।
একটি ছেলের জুতো ছিড়ে গিয়েছে। বর্ষা কালে এ জুতা ছেড়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। ছেলেটি এখন হাটছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। চারদিকে তাকিয়ে। তাকে কেউ দেখছে না তো ভঙ্গিতে। এ ব্যস্ত নগরীতে তার জুতার দিকে তাকানোর মত বা তার খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটার দিকে লক্ষ্য করার মত কেউ নেই, ইভান ছাড়া।
এক মা তার মেয়েকে নিয়ে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছে। মায়ের জুতার সোল্ড ও অর্ধেকের মত খুলে গিয়েছে। এখন যত বাঁর হাটে, ততবার জুতাটি প্যাকম্যানের মত একবার হা করে, একবার মুখ বন্ধ করে। কেমন বিরক্তিকর। মা তার নিজের অন্য পা ব্যবহার করে সোল্ডটি জুতার অন্য অংশ থেকে আলাদা করে হাঁটা ধরল। মুখে হাসি। কোন কিছু জয় করার হাসি।
শুধু ঐ ছেলেটির বা শুধু ঐ মায়ের জুতাই ছিড়তে যাবে কেন। অন্য কারো ছিড়ে নি কেন, চারপাশ দেখতে দেখতে এসব ভাবনায় ডুবে গেলো ইভান। তার ভাবনায় ভিঘ্ন ঘটিয়ে একটি অসম্ভব সুন্দরী হেঁটে গেলো তার সামনে দিয়ে। কি মনে করে ইভান উঠে দাড়ালো। মেয়েটির পেছন পেছন হাঁটতে লাগল।
সুন্দরীদের সবার ভালো লাগে। ইভানেরও ভালো লাগে। তাই পেছন পেছন হাঁটা। পেছন পেছন হাঁটতেও ভালো লাগে। মেয়েটি অনেক্ষণ লক্ষ্য করে নি তার পেছনে পেছনে কেউ হাঁটছে। যখন লক্ষ করল, তখন প্রথম বার তাকিয়ে দেখল। দ্বিতীয় বার দেখল। তৃতীয়বার ও যখন দেখল ইভান তার পেছনে, তখন জিজ্ঞেস করল আপনি আমার পেছনে পেছনে কেন আসছেন?
ইভান বলল সময় গুলোকে কাজে লাগাচ্ছি।
মেয়েটি বলল, মানে?
ইভান বলল, বসে না থেকে কোন সুন্দরীর পেছনে পেছনে হাঁটা বেশি আনন্দের। সময়ের অপচয় না করে কাজে লাগানোর মত।
মেয়েটি নিজ অজান্তেই বলে ফেলল, পাগল নি কোনো? মুখ ফসকে বের হয়ে যাওয়ার মত।
ইভান একটু হেসে বলল, সবাই তাই বলে। তারপর মেয়েটির সাপেক্ষ্যে ১৮০ ডিগ্রি পথে হাঁটা ধরল। এতক্ষণ যা ছিল তা হচ্ছে ভালো লাগা থেকে। এর থেকে বেশি ভালো লেগে গেলে মায়া পড়ে যাবে। মেয়েটি তার মনিব হয়ে উঠবে। কুকুর যেমন তার মনিবের সকল কথায় লেজ নাড়িয়ে, খেউ খেউ করে 'হ্যা' প্রকাশ করে, ইভান ও তেমনই করবে। সে কুকুরের মত সব কিছুতে 'হ্যা' বলতে চায় না। সে মানুষ থাকতে চায়। আর মানুষ থাকতে হলে যে জিনিসটা ত্যাগ করা দরকার, তা হচ্ছে এই মায়া।
// এক্সপেরিমেন্টাল লেখা। খারাপ লাগলে কিচ্ছু করার নেই।
#Jakir_Hossain
রেসিপি দেখুন