ঠিক যেন লাভ স্টোরি

মেঘা কলেজে যাওয়ার সময় রাস্তার অই পাসে একটা ছেলে কে দেখতে পায় ছেলেটা প্রতিদিন নেশা করে,সে ভাবে ছেলেটা হয়ত বখাটে তাই তাে প্রথম প্রথম তাকাতে ভয় পাইত কিন্তু এখন আর তাকাতে ভয় পায়না কারন ছেলেটা সেরকম না ছেলেটা কোন মেয়েদর কে ডিস্টার্ব করেনা।এমনকি কোন মেয়ের দিকেও তাকায় না, যদি ভুল করেও তাকায় সেই তাকার মধ্যে রয়েছে, মেঘা ভেবেছিল ছেলেটাকে একদিন জিজ্ঞেস করবে?কেন সে মেয়েদের কে ঘৃনার চোখে তাকায়, কেন?
মেঘা ক্লাস শেষ করে কলেজ থেকে বের হওয়ার সময় ছেলেটাকে তার কাজিন সুজন এর সাথে দেখতে পায়,তার কাজিন এবার অনারস থারড ইয়ার এ পড়ে তার মানে ছেলেটাও কি তার কাজিন এর সাথে পড়ে? সে ভাবে বাড়িতে গিয়ে সুজন কে জিজ্ঞাসা করবে ছেলেটার সম্পরকে।
রাতের বেলা মেঘা তার কাজিন এর বাসায় জায়।
-আরে মহারানি যে আসেন আসেন আপনাকে তো আর আজকাল দেখাই জায় না।
-ও তাই না? তুই জাস আমাদের বাসায়।।
-আরে আমি কি তোর ম মত ফ্রি থাকি নাকি? আমার কত কাজ।
-হ যানি তো কত কাজ,খালি মেয়ে পটানো, এটা ছাড়া আর কিছু পারিস বলে তো মনে হয় না।
-অই একদম সত্য কথা কবিনা,,,,, বল কি দরকারে আইছোস।
-হা দরকার তো একটু আছে, আমার কিছু তথ্য লাগবে।আর সেটা তুই দিতে পারবি।
-হ্যা বলেন কার সম্পরকে???
-তোর সাথে যে লম্বু মতন একটা ছেলে ঘুরেনা?? কলেজের পাসের দোকান টায় বসে নেশা করে।
-ও তুই তপুর কথা বলছিস? ওর কাছেও যাইস না। আর অর কোন তথ্য আমি দিতে পারব না।
-দেখ ভাল মত দিবি না জোর করব???
-তোর আবার শক্তি আছে নাকি?
-তাই না? তো চাচি কে সেদিনের পিক গুলা দেখাই।
-এই না না বলছি দারা।
তপুর আসল নাম হচ্ছে -তৌফিক এলাহি, তারা দুই ভাই বোন এবং বাবা মা মিলে একটা হ্যাপি ফ্যামিলি।তুই জানিস তপু কত ব্রিলিয়ান্ট? তপু এস এস সি ওএইচ এস সি তে জি.পি.এ -৫ পেয়েছে। তার পর আমাদের কলেজে এ এডমিশন নিয়েছে।অই তো সিগারেট পরযন্ত ছুইত না। সেদিন ফাস্ট ইয়ার কে বরন করতে গেছিলাম অইও গেছিল আমাদের সাথে, ফাস্ট ইয়ার কে বরন করে সবাই মিলে বের হচ্ছি, হঠাৎ দেখি তপু একটা মেয়ের দিকে তাকায় আছে।আমি তাকে ডাক দিলাম সে শুনেনা কাছে গিয়ে বলি............
...
- কিরে এভাবে কার দিকে তাকায় আছস?
-মেয়েটা দেখ কত কিউট,মুখ টা কত মায়াবি, চুল টা দেখ কত বড়। ঠিক যেন একটা রাজকুমারী।
-হইছে ভাই থাক আর গুনগান গাইতে হবেন।এখন চল।
-দারা সালা,মেয়েটার সাথে কথা বলে আসি আগে।
-সাবধানে যাইস দোস্ত।
আজ তপু ফারস্ট কোন মেয়ের সাথে কথা বলবে, এর আগে বান্ধবি ছাড়া আর অন্য কার সাথে কথা বলেনি।কিন্তু এটা তো আর বান্ধবি না। পা টা একটু বেশি কাপতেছে মনে হয়। অবশেষ এ তার কাছে পৌছাল,
-হাই আমি তপু
-হাই আমি শান্তি।
-আপনাকে নীল শাড়িতে দারুন মানিয়েছে।মনে হচ্ছে নীল পরি।
-ধন্যবাদ। ওকে আজ যাই।
-ওকে।
রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবছে মেয়েটা কি দিয়ে তৈরি এত মায়া কেন মেয়েটার মুখে,আর চুল গুলা এত সুন্দর কেন????নাহ কাল মনের কথাটা বলতে হবে।
আর শান্তি ভাবে না আরেকটা মক্কেল পাইলাম,এটা বোকা মক্কেল,।
পরের দিন সকালে কলজে গিয়ে তপু খোজে শান্তি কে? হঠাৎ কারো পাশে এসে দাড়ানোর অস্তিত্ব পায়।আমকে খুজছিলেন না?
-না!মানে ইয়ে
-অইতো জানি। চলেন কোথাও গিয়ে বসি।
-আচ্ছা চলেন।
-কতটা ভালোবাসেন আমাকে???
-আহ! হ্যা অনেক।
-খুব ভাল। কাল শপিং এ বাহির হব।রেডি হয়ে আসিও।
-ওকে
বাসায় এসে ড্রয়ার খুলে দেখে ৩০০০ টাকা আছে মাত্র। কাল মায়ের কাছ থেকে নিতে হবে কিছু।
এভাবে করে শান্তির চাওয়াগুলো বাড়তে লাগল,আজ শপিং তো কাল ডিনার হাপিয়ে গেছিল তপু তাও শান্তির চাওয়া গুলো পুরন করত।
হঠাৎ শান্তি একদিন তপু কে পার্ক এ ডাক দেয়।
-শোন তোমার সাথে আর আমি থাকতে পারব না।ভাল থেক আর চালাকি করার চেষ্টা করোনা।আর আমি রিসাত কে ভালোবাসি অর পাওয়ার সম্পরকে তো জান। তপু দিশেহারা হয়ে পড়ে কি করবে সে কত বড় ধোকা খেয়েছে সে নিজেও বুঝতে পারে না।তবুও তপু শান্তি কে ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করেছিল কিন্তু শান্তি মেয়েটা এত খারাপ ছিল, রিসাত এর হাতে ওকে মাইর পরযন্ত খাওইছে।তারপর থেকে অই এরকম হয়ে গেছে। কোন মেয়েকে সহ্য করতে পারে না,আর নেশা করে কেন জানিস???কারন সে বাবা মার টাকা এভাবে নষ্ট করছে সেই জন্য,এটাই হল তপুর কাহিনি।
-হুম বুজলাম। তুই তপুর বাসার ঠিকানা তা দিতে পারবি।
-কেন কি করবি??
-তোকে পরে সব খুলে বলব,আর এখন যা করতে বলতেছি তাই কর।
-ওকে।
বিছানায় সুয়ে ছিলিং ফ্যান টার দিকে তাকায় আছে মেঘা,ছিলিং ফ্যান টার দিকে তাকাই থাকলেও তার চিন্তা তপু কে নিয়ে,কিভাবে তাকে নিজের করে নেয়া যায়। কাল তপুর সাথে একবার কথা বলার চেষ্টা করতে হবে।
পরের দিন সকালে-----
এই মেয়েটা এভাবে তাকিয়ে থাকে কেন আমি বুঝিনা। এই মেয়েটার মুখেও একটা মায়া আছে, এটা মায়ার সাথে শান্তির মুখের মায়া টা একদম মিলে না। এই মায়ার মধ্যে একটা পবিত্রতা আছে।একি এই মেয়েটা আবার এদিকে আসছে কেন,
-এই যে দারান কই যান?
-আপনাকে বলতে হবে?
-হ্যা প্রয়োজন হলে বলতে হবে।
-আমি বাধ্য নই।
-এই দারান কই যান???
আর শুনবে না তপু। আবার একই ভুল সে কখনো করতে চায় না।
মেঘা ভাবছে না এভাবে হবে না,তপুর বাসায় যেতে হবে??
-আসসালামু আলাইকুম আন্টি।
-ওওয়ালাইকুম আসসালাম।কে মা তুমি?
-আন্টি আমি তপু কে অনেক ভালোবাসি ওকে আবার আগের মত করতে চাই। পিলিজ আমাকে পারমিশন দিন।........ ...............
কিছুদিন পর তপু ভাবছে এই মেয়েটাকে কিছু একটা বলে ভয় দেখাতে হবে।
অইতো আসছে মেয়েটা
-এই মেয়ে এদিক শুন? তুমি যান আমি কত খারাপ আমাকে এভাবে প্রতেক দিন ডিস্টার্ব করার জন্য তোমাকে আমি তুলে নিয়ে যেতে পারি।
-আই এম রেডি।
-+(এই মেয়ে বলে কি?এর কি ডর ভয় কিছু নাই?)
-এই যে কি বলেন বিড়বিড় করে?
-কিছু না আর আমাকে ডিস্টার্ব করবনা?
-যদি করি? আর আমি তো আপনাকে অনেক ভালবাসি।
-মেয়েটাকে একটা থাপ্পড় দিল তপু।এই টা প্রতেক বার পাবা।
মেয়েটা কাদতে কাদতে চলে গেল তপুর সামনে থেকে।
তপুর মনন টা মোচড় দিয়ে উঠল।না সে কাজটা ঠিক করেনি। মেয়েটার কাছ থেকে খমা চেয়ে নিতে হবে।
৭ দিন কেটে যায় কিন্তু মেয়েটার দেখা পায়না তপু এদিকে তপু মেঘার পবিত্র মায়ার জালে আটকা পড়ে গেছে এ কথাটাও মেয়েটাকে বলতে হবে।কিন্তু কই সে? কোথায়?
একটা আবয়ব দেখতে পায় তপু ঠিক মেয়েটার মত,তার মানে মেয়েটা আসছে, কাছাকাছি চলে এসেছে।
-এই মেয়ে এদিকে শুনো
-তোমার মায়ার শক্তি এত কেন?যে তোমার জন্য সবস সময় এখানে দাড়াই ছিলাম? আর তুমি আস নাই কেন এ কয় দিন?
-জর হয়ছিল এত জোরে, একটা মেয়ে মানুষ কে কেউ চড় মারে? চড় কারনেই তো এতদিন জরে পড়েছিলাম।
-আই এম সো সরি। আর তোমার মায়ায় আমাকে জড়িয়ে নিবা?
-শরত আছে একটা? আমাকে বিয়ে করতে হবে।তার মানে একটা চাকরি পাইতে হবে,চাকরি পাইতে হলে,ভাল করে পড়তে হবে, আর ভাল করে পড়তে হলে,নেশা ছাড়তে হবে।
-এইটা একটা শরত? ওকে চেষ্টা করব।
-হুম
হ্যা তপু পেরেছে নিজেকে তৈরি করতে মেঘার জন্য।মেঘার মায়ার শক্তি তে তপু আবার আগের মত হয়ে গেছে। পরশু তাদের বিয়ে।
মেঘা তাদের বিয়ের কারড টা ইচ্ছা করেই শান্তি কে দিয়েছে।
সেই কখন থেকে মেয়েটা একা বসে আছে। সুজন টা আবার সেই সুজগে অকে জালাই যাচ্ছে।
-মেঘা আমার হেল্প লাগবে না তোর?
-হ্যা লাগবে যা তপু কে এখানে পাঠা।
-ওকে।
তপু সালাম দিয়ে ঘরে ঢুকল।
-অই তোমার বাহিরে এতক্ষন কি হা???
-কিছুনা আমি তো এসে গেছি।
আমরাও এসে গেছি
-একি তোমরা?
তপুর বোন-তোর সমস্যা।
তপু -পাকামো বাদ দে।
তপুর মা-আমাদের প্লান টা কেমন হয়েছে বল বৌমা?
তপু-মানে কি মা?
দেখ তুই যেমন হয়ে গেছিলি তোকে আসল রাস্তায় ফেরানোর জন্য মেঘার জন্য এক্টা মেয়ে খুজছিলাম।মেঘা নিজেই একদিন এসে সব বলে আমাকে আর আমি রাজি হই+ ওকে হেল্প করি।
কেমন হয়েছে? খুব ভাল মা।
তপুর বোন-মা চল ঘুমাব।
তপুর মা বোন এবং সুজন সবাই বের হয়ে গেল।
-আমাক ঠিক করা না? দারাও এবার আমি তোমাকে ঠিক করব?
-এই না, তুমি না খুব অসভ্য হয়ে গেছ?
তাহলে এবার অসভ্যতা শুরু করতে হয়।
রেসিপি দেখুন
No comments :

No comments :

Post a Comment