আমি জানি তুমি সুখে নাই
মিথ্যা ভালবাসা জন্য মা বাবার মুখটা শেষ বার ও দেখি নাই, জেল খাটা দেশ ছড়া সবকিছুর পর আমি আজ একজন সফল মানুষ শুধু মা বাবা শেষ দেখাটা ও দেখি নাই,আর নিজের সংসার করা হলো না।
১৯৯৭ সালের ঘটনা,আজ থেকে ২৬ বছর আগে আমি আমার এক চাচাতো বোনের সাথে ৩ বছরের রিলেশন এর পর পালিয়ে বিয়ে করা।বিয়ের একদিন পর মেয়ের বাবা আমি সহ আমার মা বাবা ২ বোন আর ২ ভাইকে আসামী করে মামলা করে।
আমি সহ আমার বন্ধু কে এরেস্ট করে পুলিশ। মেয়েকে পুলিশ তাদের জিম্মা নিয়ে যায়। মেয়ে পুলিশ এর সামনে সাক্ষী দেয় আমি জোর করে উঠিয়ে নিয়ে গিয়েছি।আমি ওর ইচ্ছের বিরুদ্ধ বিয়েও নির্যাতন করি।
পুলিশ কে মেয়ের বাবা টাকা দিয়ে আমাকে আর আমার বন্ধু কে ইচ্ছেমত পিটালো।এর পরের দিন কোর্ট এ চালান করে দেয়। পুলিশ আবার রিমান্ড চায়,৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে এই ৩ দিন অনেক অত্যাচার করে পুলিশ। আজ সারা শরীর ব্যাথা করে পুলিশ এর মারের ব্যাথা।
৩ দিনের রিমান্ড শেষ আবার আদালতে নেওয়া হলো আমাদের জেল এ নেওয়া হলো ১১ মাস জেল খাটার পর জামিন এ বের হয়ে আসলাম। জেল খানা থাকা অবস্থা বাবাকে হারালাম।
জামিন বের হয়ে আসলে মা ঘরে ঢুকতে দেয় নাই।দরজা থেকে তাড়িয়ে দেয়।যেন আর কোন দিন এই বাড়িতে না আসি।আমার জন্য বাবা অপমান লাঞ্ছিত হয়ে স্ট্রোক করে পৃথিবী থেকে শেষ বিদায় নেয়।
বাড়ি থেকে যেদিন বের হয়ে আসি আমার পকেট বোনের দেওয়া ১১০০ টাকা ছিলো। সেই ১১ শ টাকা দিয়ে মেহেরপুরের মজিব নগর হয়ে ভারতে চলে যাই। সেইখানে ৩ মাসের উপর ছিলাম। এইখানে ২ মাসের মত কলকাতা নিউমার্কেটে একটা দোকানে কাজ করি।ভারতীয় রুপিতে ৬ হাজার ৭ শত টাকা নিয়ে দালাল এর মাধ্যমে পাকিস্তানে চলে যাই। এইখানে আসার পর ২ বছর করাচীতে এক বাংলাদেশে ভাইয়ের মাধ্যমে সাগরে মাছ ধরার কাজ করে ২ বছরে পাকিস্তানী টাকা ৬ লাখ টাকা জমা করি। এই টাকা দিয়ে পাকিস্তান থেকে ইরান হয়ে তুরস্ক দিয়ে গ্রীস চলে আসি। গ্রীস থেকে জার্মানি চলে আসি।অনেক পরিশ্রম আর সফলতার পর আমি এখন জার্মানি তে একজন সফল রেস্টুরেন্ট ব্যাবসায়ী।
এখন আমার জার্মানি ৪ টা রেস্টুরেন্ট আর ৭ টা কপি শফ।জীবনে এতো সফলতার পর ও আমার কিছু এ নাই।
মা কে হারালাম, বাবাকে হারালাম কারো লাশ ও দেখি নাই।যে বোনটা আমাকে ১১ শ টাকা দিয়েছে,শুনেছি ওর সাথে ওর স্বামীর ডিভোর্স হয়েছে আমার জন্য।আমি জেল থেকে বের হয়ে আসার পর আমার বোন আর ভাইকে এরেস্ট করায়।বোন এরেস্ট এর পর বোনের স্বামী আমার বোন কে ২ মেয়ে আর ১ ছেলে সহ ডিভোর্স দেয়।
বোনটা ও অসুস্থতা আর অপমান আর নিজের সংসার হারানোর যন্ত্রণা তিল তিল করে মারা যায়। আমি কিছু এ জানতাম না।কারণ আমার সাথে বাংলাদেশের কারো সাথে যোগাযোগ ছিলো না ১২ বছর।১২ বছর পর সফল হয়ে বাংলাদেশ এ আসি ভিজিট ভিসা নিয়ে।নিজের এলাকা যাই । কেউ চিনেনা, কিছু মুরুব্বি ছিনে আমাকে। সেই যে দেশ থেকে ১১ দিন পর আসলাম আর কখনো দেশে যাই না।২ ভাই কে জার্মানি তে নিয়ে আসলাম। ১ বোন আর তার ছেলে মেয়েদের নিয়ে আসলাম। যে বোন মারা গেছে উনার ১ মেয়েকে আর ছেলেকে জার্মানিতে নিয়ে আসলাম।
এতোকিছুর পর ও আমার কিছু এ নাই।এখনো ভালবাসি সেই ভালবাসার মানুষটিকে।যে আমার জীবন কে ধংস করে দিয়েছে। শুনেছি ও বিয়ে করে ওর ২ ছেলে মেয়েকে বিয়ে ও দিয়েছে।
সেইদিন আমার বাবার টাকা ছিলো না আর ক্ষমতা ছিলো না বলে আমি সহ আমার পুরো পরিবার শাস্তি পেয়েছি। আজ আমার টাকা ও আছে ক্ষমতা ও আছে।কিন্ত এই টাকা আর ক্ষমতা দিয়ে আমি শুন্য।
ফেসবুকে অনেক গল্প পড়ি সবার জীবনের, ২৬ বছর পর মনে হলো নিজের জীবনের গল্পটা সবার সাথে শেয়ার করি।
মনে রাখবেন কাউকে ঠকিয়ে কেউ সুখী হয় না,আমি জানি তুমি সুখে নাই।কারণ তোমার স্বামী একজন চরিত্রহীন মানুষ।
টাকা আর ক্ষমতার অহংকার কখনো দেখাতে নাই,যে আজ রাজা সে আগামীকাল ফকির। তোমার বাবার ক্ষমতা আর টাকা ২ টা এক সাথে ধংস হয়ে গিয়েছিলো,কারণ আল্লাহ অহংকারী কে পছন্দ করে না।তোমার বাবা ক্যান্সারের চিকিৎসার সব টাকা আমার দেওয়া,তারপর তোমার ভাইরা তোমার বাবাকে বাঁচাতে পারে নাই।
ভালো থাকুক সকল প্রতারকরা।
No comments :
Post a Comment