মরুর ফুল ২৬
ইরান সম্রাট যে ছেলেকে ভবিষ্যতে মসনদে বসাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সেই ছেলের নাম মারোজা। সে সম্রাটের দ্বিতীয় স্ত্রী বড় ছেলে। সম্রাটের অন্যান্য শাহজাদাদের মতই তার জীবন যাপন। তবে সে রাজনীতিতে দুর্বল। সম্রাটের ছেলে ফররুখ শুধুমাত্র নারীলোভী, দুনিয়ার অন্য কিছুতেই তার আগ্রহ নেই তাই সে সম্রাটের প্রিয়। কারণ তাকে দিয়ে সম্রাটের অন্য কোন ক্ষতি হবে না। সম্রাট চিন্তা করলেন এই ছেলেকে যদি সম্রাজ্যের ক্ষমতা দেয়া হয় তাহলে নারী নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে করতে শাষন কার্যের দিকে মনোনিবেশ করতে পারবে না। এতে দ্রুত তার সম্রাজ্যের পতন হবে। সম্রাটের উনিশজন ছেলের মধ্যে মারোজা বাবার সবচেয়ে বড় ভক্ত। তাকে মনে হল সে ক্ষমতার প্রতি তেমন লোভী নয় যেটা সম্রাটের অন্য ছেলেদের মধ্যে দেখেছেন। তাই সম্রাটের প্রথম পছন্দ হল মারোজা। এরপরেই যাদের নাম সিরিয়ালে আসে তাদের মধ্যে সম্রাটের চতুর্থ স্ত্রী প্রথম ছেলে। এরপরে আরেকজন কিন্তু সম্রাট যাদের নিয়ে সন্দীহান তাদের মধ্যে শেরওয়া অন্যতম। এই ছেলেকে সেনাবাহিনীর বড় পদ দিয়ে যুদ্ধে পাঠানো হলে দেখা গেছে সেনাদের মধ্যে সে ভালই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যা সম্রাটের জন্য বিপদের কারণ। তাকে দ্রুত রাজধানীতে আনা হল। তাকে রাজ কাজে অংশগ্রহন থেকে বিরত রাখা হল। রাণি শিরি হলেন এই ছেলের মা। শেরওয়ার বিষয়টা যখন রাণির কানে তোলা হল তখন রাণি নিজেও সম্রাটকে বলেছেন “আমি দেশের ভিতরে যুদ্ধ চাই না। আপনি আমার ছেলেকে রাজধানীতে ফিরিয়ে আনুন। তাকে আমি পূজারী বানাব।” শেরওয়া তখন সেনাবাহিনীতে এতটাই জনপ্রিয় ছিলেন যে তাকে দিয়ে বিদ্রোহ করা সম্ভবনা ছিল। সেনাপতি খালেকদুন তখন সম্রাটের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। খালেকদুন তখন জেরুজালেমের গভর্ণর। তিনি শেরওয়াকে বোঝালেন “বাবা, তুমি মাদায়েন ফিরে যাও। আমি সব কিছু দেখব।” খালেকদুনের সাথে শেরওয়ার একটা গোপন বৈঠক হল। তারপর তাকে খালেকদুনের নিজস্ব সেনা পাহারায় রাজধানীতে ফেরত পাঠানো হল।মাদায়েনে আসার পরে শেরওয়া কিছুদিন সম্রাটের গোয়েন্দা বাহিনীর নজরে ছিলেন। কিছুদিন পরে দেখা গেল শেরওয়ার সাথে সেনা বাহিনীর কোন সম্পর্ক নেই। তিনি শুধু অগ্নিপূজা নিয়েই ব্যস্ত রয়েছেন। পূজারীদের সাথেই শেরাওয়ার সব ধরনের সম্পর্ক। সম্রাট জানে পূজারীরা সম্রাটের কোন ক্ষতি করবে না। সম্রাট নিশ্চিত হলেন, তিনি গোয়েন্দাদের নজর দারী উঠিয়ে নিলেন। এটা প্রায় বছর চারেক আগের ঘটনা হবে।
হবু সম্রাট মারোজাও রাণি শিরিকে পছন্দ করতেন কারণ সম্রাজ্যের পরবর্তী কান্ডারী হওয়ার পেছনে এই রাণির সমর্থন ছিল। রাণি শিরি নিজের ছেলের নাম না নিয়ে মারোজার নাম যখন বললেন তখন মারোজা নিজের কানকেও বিশ্বাস করল না। রাণি কী করে নিজের ছেলেকে বাদ দিয়ে তার নাম বলল! সে তো সৎ ছেলে! রাণিকে নজর বন্দি করার ঘটনা শুনে মারোজা দ্রুত রাণির কক্ষে চলে আসল “কী হয়েছে মা? বাবার হঠাত কী হল? তিনি কেন এই সিদ্ধান্ত নিলেন?”
“তোমার বাবা ইদানিং উলটা পাল্টা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে শাস্তি দেন। কারো পরামর্শ শুনছেন না। ওয়ার ভুল সিদ্ধান্তের কারণে রোমানরা আমাদের দখল কৃত অধিকাংশ দেশ দখল করে ফেলেছে” এরপরে তিনি খালেকদুন, সোহরাবের বিষয়টা উল্লেখ করলেন। সব শুনে শাহজাদা মারোজা বললেন “আপনি কিছুদিন ধৈর্য ধরেন। আমি বাবাকে বুঝিয়ে বলব। এক সময় পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে।”
মারোজা চলে যাবার পরে রাণি শিরির ছেলে শেরওয়া এল। তার শরীরে পূজারীদের পোষাক। রাণির সাথে ছেলের খুব কমই দেখা হয়। এই ছেলেটা সারাদিন মন্দীরে মন্দীরে ঘুরে বেড়ায়। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে পূজা অর্চনা করে। রাণি হতাশ কন্ঠে বললেন “খালেকদুনের জীবন বিপন্ন। সম্রাট আমার সামনে খালেকদুনের বিরুদ্ধে যদিও কিছু বলেনি কিন্তু আমি জানি এতক্ষনে তিনি খালেকদুনের মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়ে ফেলেছেন। সম্রাট যাকে পথের কাঁটা মনে করেন তাকে মেরে ফেলেন-সে ইরানী হোক কিংবা রোমান হোক এমনকি নিজের ছেলে হোক না কেন। আগামীকাল সকালে জায়েদের ফাঁসি কার্যকর হবে। সোহরাব যে নিরাপরাধ তার প্রমাণ দুনিয়া থেকে মুছে যাবে।”
শেরওয়ার সেই দিকে মনে নেই মনে হচ্ছে। সে রাজ প্রাসাদের মন্দীরে প্রবেশ করল। মন্দীরে শাহজাদা সোহরাবের বাবা পূজা করছেন। শেরওয়া তার পাশে গিয়ে অগ্নিপূজা শুরু করল।
---
গভীর রাত, কারাগারের সামনে আট দশ জন ঘোড় সওয়ারের আগমন। প্রধান ফটকের বাইরে দাঁড়ানো কারারক্ষী দেখল সবার গায়ে রাজকীয় সেনার পোষাক তাই সে সাবধান হয়ে গেল, চোখ থেকে ঘুম ঘুম ভাব দূর করার চেষ্টা করল। ঘোড়া থেকে একজন লোক নামলেন। রক্ষী তার মুখ দেখেই বলল “হুজুর এতক্ষনে এসেছেন? আমি আপনার কথা মত চাবি চুরি করে রেখেছি।”
লোকটি একটা থলের মুখ খুলে রক্ষীকে দিল “তুমি এখনই মাদায়েন ছেড়ে চলে যাও। আগামী মাসে ফিরে আসবে। তুমি হবে রাজ প্রাসাদের প্রহরী।” থলের স্বর্ণ মুদ্রা দেখে রক্ষীর চোখ চকচক করে উঠল।
প্রহরী চলে যাওয়ার সময় কারাগারের চাবিগুলো লোকটির হাতে দিয়ে দিল। রক্ষী ছেলেটা অনেক কাজের। সে প্রধান ফটকের তালা আগেই খুলে রেখেছে। ভেতরের প্রহরীও নেই, তার মানে সব কিছু পরিকল্পনা মত হচ্ছে। তিন জন লোক কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করল। একজন গিয়ে নব নিযুক্ত প্রধান কারারক্ষীর দরজার সামনে দাঁড়ালো। বাকী দুই জন গিয়ে জায়েদের কক্ষের দরজা খুলল। এই কক্ষের সামনেও কোন ‘জীবিত’ প্রহরী নেই। যে প্রহরী ছিল তাকে কিছুক্ষন আগে মেরে ফেলা হয়েছে। জায়েদকে বলা হল “তুমি আমাদের সাথে আসো”
জায়েদের এখন নিজের কোন ইচ্ছা অনিচ্ছার মূল্য নেই। এত রাতে রাজকীয় সেনাদের দেখে সে অবাক হল না। কারণ মাদায়েনের আসার সে এত কিছু দেখেছে যে অবাক হবার ক্ষমতা তার আর নেই।
তার হাত পা বাঁধা হল না। কারাগারের বাইরে নিয়ে চুপিচুপি তাকে একটা ঘোড়ায় উঠিয়ে দেয়া হল। চারপাশে সেনা পাহারায় তাকে মাদায়েন শহরের একটা বাড়ীতে নেয়া হল।
এক সেনা তাকে বলল “তুমি এখন নিজেকে বন্দী মনে করে না। তুমি আমাদের মেহামান। তবে মাদায়েনের পরিস্থিতি তোমার অনুকূলে নয় বলে বাইরে বের হওয়া তোমার জন্য নিরাপদ না। প্রধান কারারক্ষীকে হত্যা ও রাজকীয়ে সেনা অফিসার হত্যার অভিযোগে তোমার ফাঁসির আদেশ হয়েছে। আগামীকাল ফাঁসি কার্যকর হবার কথা। তুমি যদি এই বাড়ীর বাইরে যাও তাহলে তোমার কোন দায়িত্ব আমরা নিতে পারব না। আপাতত তুমি এখানে কিছুদিন লুকিয়ে থাক। সময় হলে আমরা তোমাকে এখান থেকে বের করে নিয়ে যাব।”
জায়েদ কোন উত্তর দিল না। উত্তর দেয়ার মত কথাও লোকটি বলেনি, লোকটি শুধু আদেশ করেছে। ওরা ইচ্ছে করলে জায়েদকে এখনই মুক্তি দিতে পারত। জায়েদ চুপিসারে মদীনা চলে যেতে পারত কিন্তু তারা তা করছে না। এতে নিশ্চয়ই তাদের স্বার্থ রয়েছে। আচ্ছা এরা কি খালেকদুনের স্ত্রী লোক? না মনে হয় না। তাহলে এরা কারা? এসব প্রশ্ন মনের মধ্যে ঘুরপাক খেতে খেতে জায়েদ ঘুমিয়ে পড়ল। সে রাতে স্বপ্নে সে মেহরিনকে দেখল।
---
আজ রাতটা সবার জন্যই দুর্ভোগের রাত। আজ রাতেই সম্রাট তার বন্ধুর মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়ে দূত পাঠালেন। কিছুক্ষন পরে পাহারাদার এসে শোনাল শাহজাদা ফররুখ আহত হয়েছে। রাজ প্রাসাদের সীমানাতেই তাকে খালেকদুনের মেয়ে ছুরির আঘাত করে আহত করেছে। এমনিতেই খালেকদুনের প্রতি সম্রাটে অনেক রাগ তার উপর তার মেয়ে শাহজাদাকে মেরে আহত করেছে শুনে সম্রাটে রেগে আগুণ হয়ে গেলেন। তিনি চিৎকার করে বললেন “বাপের মত মেয়েকেও মেরে ফেল।”
রক্ষী ভয়ে ভয়ে বলল “শাহজাদা বলেছেন মেয়েটাকে ওনার দাসী বানাবেন।”
“তাহলে কিছুদিন দাসী হিসেবে রাখার পরে মেরে ফেলা হোক” সম্রাট বললেন।
সম্রাটের জন্য সকালে আরো খারাপ সংবাদ অপেক্ষা করছিল।
---
মেহরিন ও তার মা রাজ প্রাসাদে একটা কক্ষে বন্দী। এই কক্ষটা মূলত রাজকীয় সেনাদের কক্ষ। সেখানে আপাতত মা মেয়েকে বন্দী করে রাখা হয়েছে। বাইরে একজন প্রহরী দাঁড়িয়ে রয়েছে। মেহরিন ও তার মা আরবীতে কথা বলছে। কিছুক্ষন আগে তারা জায়েদের জীবন নিয়ে শংকিত ছিল আর এখন তারা নিজেদের জীবন নিয়েই শংকিত হয়ে গেছে।
“মা” মেহরিন মুখ খুলল “যদি কখনো এখান থেকে মুক্তি পাই তাহলে আমি সোজা আরবে চলে যাব। মাদায়েনে মানুষ থাকে?”
“এই মাদায়েনে এরকম হত ভাগ্য হাজার হাজার লোক থাকে। যুগ যুগ ধরে ইরানীরা এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এ থেকে আমাদের মুক্তি নেই। আর তুমি আরবে গিয়ে কী করবে? সেখানে জন্মালে হয়তো তোমাকে তোমার জন্মের কিছুদিন পরেই মেরে ফেলা হত। আরবে মেয়েদের কোন মূল্য নেই। তুমি ইরান সেনাপতির মেয়ে বলে সবাই তোমাকে গুরুত্ব দিয়েছিল কিন্তু সাধারণ মেয়েদের অবস্থা খুব খারাপ। আমাকে আমার চাচা হাটে বিক্রি করে দিয়েছিল দাস ব্যবসায়ীদের কাছে।”
“তুমি যে আরবের কথা বলছ মা আমি সেই আরবের কথা বলছি না। আমি বলছি আরবের সেই বিপ্লবের কথা যাতে মেয়েদের মর্যাদা দেয়া হয়েছে।”
“তুমি মুসলমানদের কথা বলছ নিশ্চয়ই। আমি সেই বিপ্লব নিয়ে আশাবাদী নই। যে বিপ্লব ধনী গরিব দাস গোলাম মনিবের ভেদাভেদ করে না সেই বিপ্লবের পক্ষে শুধু গরিবরাই থাকবে। শক্তিশালী ধনী আরব সে বিপ্লবের বিপক্ষে থাকবে। তুমি বণু গাফতান গোত্রের লোকদের উদাহরণই দেখ না- তাদের মধ্যে যারা অসহায় গরিব খেতে পায় না শুধু তারাই নবীর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েছে। ইসলাম গ্রহণকারী কেউ সুখে দিন যাপন করতে পারছে না। তাদেরকে গোত্র পতিরা সামাজিকভাবে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। মক্কার মুসলমানরা এখনো গোপনে গোপনে তাদের ধর্ম পালন করে। তাদের পবিত্র ঘর কাবায় মুসলমানদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। যারা নিজেদের নিরাপত্তাই দিতে পারছে না তারা অন্যদের নিরাপত্তা কীভাবে দিবে? আর মুসলমানদের নিয়ে ভাবার সময় এখন নেই। আমি তোমার ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবছি। ফররুখের হাত দিয়ে প্রচুর রক্ত বেরিয়েছে দেখলাম। আঘাতটা খুব ভাল করেই লেগেছে।”
“আমার এখন মনে হচ্ছে আঘাতটা ওর বুকে করলেই ভাল হত। মরে গেলে খুব বেশি হলে আমার ফাসি হত। ফররুখের দাসী হয়ে বেঁচে থাকার চাইতে আমার মরে যাওয়া ভাল ছিল।”
“ফররুখের সাথে আমাদের ঝামেলা না হলে আমরা হয়তো রাণি শিরির কাছে যেতে পারতাম। রাণি নিশ্চয়ই জায়েদের জন্য কিছু করতেন। আগামীকাল জায়েদের ফাঁসি হবে।”
মেহরিনের দু’চোখে পানি দেখে মা বললেন “কান্নাকাটি করে কোন লাভ নেই। তোমার শাহজাদার স্ত্রী হওয়ার কথা ছিল কিন্তু এখন দাসী হবে। আমি এক সময় তোমার বাবার দাসী ছিলাম। মেয়েদের এসব মেনে নিতে হয়।”
“আমি শাহজাদার কথা ভাবছি না মা। আমি ভাবছি জায়েদের কথা। বেচারা আমাদের জন্য কত কষ্ট করল। অথচ আমরা তার জন্য কিছুই করতে পারলাম না। তার খুব ইচ্ছা ছিল মদীনায় চলে যাবে। নতুন দ্বীন গ্রহন করবে। আমার খুব ইচ্ছা আমিও তার সাথে মদীনায় চলে যাই।”
“তুই ইরান সেনাপতির মেয়ে হয়ে চাকরের দিকে নজর দিয়েছিস?”
“আমার নজরের আর কোন দাম নেই মা। আমি এখন কিসরার গোলাম। আচ্ছা মা বলতো আমাকে এই জীবনের চাইতে কি জায়েদের সাথে থাকা আমার জন্য ভাল হবে না?”
মেহরিনের মা কিছু বললেন না। বুঝলেন মেহরিনের মনে জায়েদ ছাড়া আর কিছুই নেই। এত বিপদের মধ্যেও সে জায়েদের কথা ভাবছে।
---
সকালে সম্রাটের কাছে তিনটি খবর আসল- এক, শাহজাদা ফররুখের অবস্থার অবনতি হয়েছে। তার শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। দুই- জায়েদ আবার কারাগার থেকে পালিয়েছে। জায়েদের কক্ষের সামনে যে পাহারাদার ছিল তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। তার মানে বাইরে থেকে কেউ এসে জায়েদকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে। প্রধান ফটকের পাহারাদারকেও পাওয়া যাচ্ছে না।
“আর সোহরাব? তার কী অবস্থা? সেও কি পালিয়েছে?”
“না হুজুর, শাহজাদাকে তার কক্ষেই পাওয়া গেছে। শাহজাদা সোহরাব পালিয়ে গেলে না হয় বুঝতাম শাহজাদা আর জায়েদ এক সাথে পালিয়েছে কিন্তু জায়েদ একা একা পালিয়েছে ব্যাপারটা কেমন যেন ঘোলা লাগছে।” রক্ষী কিছুক্ষন থামল “আরেকটা কথা, আপনার কাছে আরবের এক লোক এসেছে। তিনি বলেছেন তিনি ওনাদের নবীর চিঠি নিয়ে এসেছেন।”
“কোন সে নবী? যে আমাদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যৎবাণী করেছিল? সে আমার কাছে কী চায়? তাকে নিয়ে এসো।” সম্রাট বিশ্বাস করুক আর নাই বা করুক নবীর ভবিষ্যৎবানী সঠিক হয়েছে।
“সেই নবীর খবর তুমি কী জান?”
“কিছুটা জানি। মক্কার সবচেয়ে শক্তিশালী বংশ কুরাইশ যারা কাবা ঘরের নিয়ন্ত্রণ করেন সেই বংশে নবী জন্মগ্রহণ করেছেন। নবুয়্যতের দাবীর পরে তারা তার উপর এমন অত্যাচার শুরু করে যে তিনি মদীনায় পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এখন অবশ্য মক্কাবাসীর সাথে নবীর অনুসারীদের একটা চুক্তি হয়েছে।”
“তাদের যোদ্ধা কত?”
“শেষ যুদ্ধে তিন হাজারের মত ছিল” বিদ্রুপের কন্ঠে রক্ষী বলল। এই রাজ প্রাসাদের কর্মচারীর সংখ্যাই দশ হাজারের মত।
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
No comments :
Post a Comment