মরুর ফুল ২৭
ষষ্ঠ হিজরীর শেষ দিকে রাসূল (সাঃ) হোদায়বিয়া থেকে ফিরে আসার পর বিভিন্ন বাদশাহ ও আমীরের নামে চিঠি প্রেরণ করে তাদের ইসলামের দাওয়াত দেন। রাসূল (সাঃ) এসব চিঠি প্রেরণের ইচ্ছা করলে তাঁকে বলা হয় যে, চিঠিতে সীলমোহর দেয়া হলেই বাদশাহ তা গ্রহণ করবেন। এ কারণে রাসূল (সাঃ) রূপার আংটি তৈরী করেন, এতে মোহাম্মদ, রসূল ও আল্লাহ এই শব্দ তিনটি খোদাই করা হয়েছিলো। আল্লাহ ১ম, রসূল ২য় এবং মোহাম্মদ ৩য় লাইনে লেখা হয়।চিঠি লেখার পর রাসূল (সাঃ) অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সাহাবাদের কয়েকজনকে চিঠিসহ বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করেন। খয়বর রওয়ানা হওয়ার কয়েকদিন আগে সপ্তম হিজরীর ১লা মহররম তারিখে রসূল (সাঃ) এ সকল দূত প্রেরণ করেন।
চিঠিগুলো তিনি পাঠান-
হাবশার বাদশাহ নাজ্জাশীর নামে
মিশরের বাদশাহ মুকাওকিসের নামে
ইরানের সম্রাট খসরু পারভেজের নামে
রোমান সম্রাট হেরাক্লিয়াসের নামে
বাহরাইনের শাসনকর্তা মুসযের ইবেন সাদির নামে
ইয়ামামার শাসনকর্তা হাওজা ইবনে আলীর নামে
দামেশকের শাসনকর্তা হারেস ইবনে শিমার গাসসানীর নামে
---
ইরানের শাসনকর্তা খসরু পারভেজের নামে রাসূল (সাঃ) যে চিঠি পাঠিয়েছিলেন তা প্রথমে পাঠানো হয় বাহরাইনের শাসনকর্তার কাছে। এ চিঠি নিয়ে যান সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবেন হুযাইফা (রাঃ)। কিন্তু বাহরাইনের শাসনকর্তা এ চিঠি নিয়ে ইরানের সম্রাটের কাছে যাওয়ার সাহস করে নি। তিনি সাহাবীকে বললেন “আপনি নিজেই এই চিঠি নিয়ে যান।” চিঠিটি ছিল নিম্নরূপঃ
“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আল্লাহর রাসূল মোহাম্মদ (সাঃ) এর পক্ষ থেকে ইরান সম্রাট কিসরার নামে। তাকে সালাম যে হেদায়েতের পথ অনুসরণ করে। আল্লাহ্ ও তার রাসূলের (সাঃ) উপর ঈমান আনার পর যে ঘোষনা করে যে আল্লাহ্ একক। তিনি আমাকে সমগ্র বিশ্বের জন্য নবী করে পাঠিয়েছেন। প্রতিটি মানুষকে তিনি আল্লাহর ভয় দেখাতে পারেন যদি তুমি ইসলাম গ্রহণ কর তবে শান্তি পাবে আর যদি ফিরে যাও তবে প্রজাদের সকল দায় দায়িত্ব তোমার।”
এই প্রথম ইরান সম্রাটের আগে কেউ নিজের নাম লেখার সাহস পেল। যদিও আরবের মরু এলাকা থেকে ইরান সরকার কোন খাজনা পেত না কিন্তু পৌত্তলিকদের অধীনে থাকার কারণে সম্রাট আরবের মরু অঞ্চলের বাসিন্দাদেরকে নিজের প্রজা ভাবতেন। দোভাষী যখন চিঠি পড়ে শোনাচ্ছিল দরবারের তখন হাসির রোল পড়ে গেল। সম্রাট রাগে চিঠি দোভাষীর হাত থেকে কেড়ে নিয়ে চিঠিটি টুকরো টুকরো করে ফেলল। এমন এক লোক ইরান সম্রাটকে আনুগত্যের আহবান জানিয়েছেন যার অধীনে মদীনা ও আরবের ছোট খাট কিছু এলাকা ছিল। যার অনুসারীর সংখ্যা হাতে গোণা। যার অনুসারীরা দুই বেলা পেট পুরে খেতে পারে না। যে নবী ও তার অনুসারীরা ক্ষুধার জ্বালায় পেটে পাথর বেঁধে রাখে সেই নবী কী করে ইরান সম্রাটকে আনুগত্যের নির্দেশ দেয়! সম্রাট ইয়ামেনের গভর্ণর বাজানকে নির্দেশ দেন- যে নবী আমার কাছে চিঠি লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছে তাকে গ্রেফতার করে আমার কাছে পাঠিয়ে দাও।
গতকাল মাদায়েনবাসীর আলোচনার বিষয় ছিল জায়েদ, শাহজাদা সোহরাব আর আজ মাদায়েনবাসীর আলোচনার বিষয় হল মদীনার এক নিঃস্ব মানুষের ইরান সম্রাটকে আনুগত্যের আহবান জানিয়ে চিঠি লিখেছেন। ব্যাপারটা নিয়ে রাজকীয় সেনারা হাসাহাসি করতে লাগল। কক্ষের ভেতর থেকে মেহরিন ও তার মা বাইরের সেনাদের কথা বার্তা শুনতে লাগল। খালেকদুনের স্ত্রী সেনাদের কথা শুনে হা হয়ে গেল। আরবের সেই লোক কি পাগল? পাগল না হলে সে কী করে ইরান সম্রাটকে আনুগত্যের আদেশ দেয়? খালেকদুনের স্ত্রীর মাথায় কিছু ঢুকছে না। মেহরিন স্মিত হেসে বলল “আমি বলেছিলাম না তিনি আসলেই সৃষ্টি কর্তার প্রেরিত পুরুষ। নইলে অর্ধেক দুনিয়ার বাদশাহকে ওনার পথে আনতে চান কোন সাহসে? তুমি যাই বল না কেন আমি মুক্তি পেলে সেই নবীর জীবন বিধানকেই নিজের জীবন বিধান হিসেবে মেনে নিব।”
“ততদিনে বাঁচতে পারলে” খালেকদুনের স্ত্রী আশাহত কন্ঠে বলল।
---
রাসূল (সাঃ) এর চিঠি সেই সময়ে রোমান সম্রাটের কাছেও পৌঁছুল। চিঠিটি ছিল নিম্নরূপঃ
“পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রসূল মোহাম্মদের পক্ষ থেকে রোমের মহান হিরাক্লিয়াসের প্রতি।
সালাম সেই ব্যক্তির প্রতি, যিনি হেদায়াতের আনুগত্য করেন। আপনি যদি ইসলাম গ্রহণ করেন তবে শান্তিতে থাকবেন। যদি ইসলাম গ্রহণ করেন, দুই রকমের পুরস্কার পাবেন। যদি অস্বীকৃতি জানান, তবে আপনার প্রজাদের পাপও আপনার ওপর বর্তাবে। হে আহলে কিতাব, এমন একটি বিষয়ের প্রতি আসুন, যা আমাদের ও আপনাদের জন্যে একই, সমান। সেটি হচ্ছে যে, আমরা আল্লাহ তায়ালা ব্যতীত অন্য কারো উপাসনা আনুগত্য করবো না। আল্লাহ ব্যতীত আমাদের কাউকে শরিক করবো না। আল্লাহ ব্যতীত আমাদের কেউ পরস্পরকে প্রভু হিসাবে গ্রহণ করবো না। যদি লোকেরা অমান্য করে, তবে তাদের বলে দিন যে, তোমরা সাক্ষী থাকো, আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি।”
এই চিঠি পৌঁছানের জন্যে রাসূল (সাঃ) হযরত দেহিয়া খলীফা কারবিকে মনোনীত করেন। তাকে বলা হয়, তিনি যেন এই চিঠি বসরার শাসনকর্তার হাতে দেন। বসরার শাসনকর্তা সেটি সম্রাট হিরাক্লিয়াসকে পৌঁছে দেবেন। এই চিঠি যখন রোমান সম্রাটের কাছে পৌঁছুল তখন তিনি জেরুজালেমের বায়তুল মুকাদ্দাসে অবস্থান করছিলেন। চিঠি পেয়ে তিনি আদেশ করলেন আরবের কেউ থাকলে তাকে এখানে নিয়ে আস। আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে মক্কার একদল ব্যবসায়ী তখন গাজায় অবস্থান করছিল। সম্রাটের আদেশে তাদেরকে দরবারে আনা হয়।
সম্রাট হিরাক্লিয়াস মক্কার বাণিজ্য প্রতিনিধিদলকে সামনে রেখে তার দোভাষীকে তলব করেন। এরপর দোভাষীর মাধ্যমে জিজ্ঞাসা করেন যে, যিনি নিজেকে নবী বলে দাবী করেন তার সাথে বংশগত সম্পর্কের দিক থেকে তোমাদের সধ্যে কে কাছাকাছি?
আবু সুফিয়ান বলেন “আমিই তার কাছাকাছি”
হিরাক্লিয়াস “ওকে আমার কাছাকাছি নিয়ে এসো আর তার সঙ্গীদের তার পেছনেস বসাও।” এরপর হিরাক্লিয়াস তার দোভাষীকে বললেন “এ লোকটিকে আমি সেই নবীর দাবীদার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবো। যদি সে কোন কথার জবাবে মিথ্যা বলে, তবে তার সঙ্গীদের বলে দাও, তারা যেন সাথে সাথে প্রতিবাদ করে”
আবু সুফিয়ান বলেন “আল্লাহর শপথ, যদি মিথ্যা বলার দুর্নাম হওয়ার ভয় না থাকতো, তবে আমি তাঁর সম্পর্কে অবশ্যই মিথ্যা বলতাম।”
সামনে এনে বসানোর পর হিরাক্লিয়াস সর্বপ্রথম আবু সুফিয়ানকে প্রশ্ন করেন “তোমাদের মধ্যে সে লোকটির বংশ মর্যাদা কেমন?”
আবু সুফিয়ান “তিনি উচ্চ বংশ মর্যাদার অধিকারী”
হিরাক্লিয়াস “তিনি যা বলেন, এ রকম কথা কি তাঁর আগে তোমাদের মধ্যে অন্য কেউ বলেছিলেন?”
আবু সুফিয়ান “না”
হিরাক্লিয়াস “তাদের পূর্ব পুরুষের মধ্যে কেউ কি সম্রাট ছিলেন?”
আবু সুফিয়ান “না”
হিরাক্লিয়াস “বড়লোকেরা তার আনুগত্য করেছে, না দূর্বল লোকেরা?”
আবু সুফিয়ান “দুর্বল লোকেরা”
হিরাক্লিয়াস “তাদের সংখ্যা বাড়ছে না কমছে?”
আবু সুফিয়ান “বেড়েই চলেছে”
হিরাক্লিয়াস “এই ধর্ম বিশ্বাস গ্রহণের পর কেউ কি ধর্মান্তরিত হয়েছে?”
আবু সুফিয়ান “না”
হিরাক্লিয়াস “তিনি যা বলছেন এসব বলার আগে কেউ কি তাকে মিথ্যা বলার জন্যে কখনো অভিযুক্ত করেছে?”
আবু সুফিয়ান “না”
হিরাক্লিয়াস : তিনি কি বিশ্বসঘাতকতা করেন?
আবু সুফিয়ান “জ্বী না। তবে বর্তমানে তার সাথে একটি সন্ধিসূত্রে আমরা আবদ্ধ রয়েছি। এ ব্যাপারে তিনি কি করবেন আমরা জানি না”
হিরাক্লিয়াস “তোমরা কি তার সাথে যুদ্ধ করেছো?”
আবু সুফিয়ান “হাঁ”
হিরাক্লিয়াস “তোমাদের এবং তার যুদ্ধ কেমন ছিলো?”
আবু সুফিয়ান “যুদ্ধ আমাদের এবং তার মধ্যে বালতির মতো। কখনো তিনি আমাদের পরাজিত করেন, কখনো আমরা তাকে পরাজিত করি”
হিরাক্লিয়াস “তিনি তোমাদের কী কাজের আদেশ দেন?”
আবু সুফিয়ান “তিনি বলেন, তোমরা শুধু আল্লাহর এবাদাত করো, তাঁর সাথে কাউকে শরিক করো না। তোমাদে পিতা-পিতামহ যা বলতেন সত্যবাদিতা, পরহেযগারি, পাক-পবিত্রতা পরিচ্ছন্নতা এবং নিকটাত্মীয়দের সাথে ভালো ব্যবহারের আদেশ দিয়ে থাকেন”
এরপর হিরাক্লিয়াস তার দোভাষীকে বললেন, এই লোকটিকে বলো যে, আমি যখন নবুয়তের দাবীদারের বংশ মর্যাদা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি, তখন সে বলেছে, তিনি উচ্চ বংশ মর্যাদা সম্পন্ন। নিয়ম হচ্ছে যে, পয়গাম্বর উচ্চ বংশ মর্যাদা সম্পন্ন লোকদের মধ্য থেকেই প্রেরিত হয়ে থাকেন। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছি যে, তাঁর আগে তোমাদের মধ্যে অন্য কেউ এ ধরনের কথা বলেছিলো কিনা। সে বলেছে যে, বলেনি। যদি অন্য কারো বলা কথাই সে পুনরাবৃত্তি করতো, তবে আমি বলতাম যে, এই লোকটি অন্যের বলা কথারই প্রতিধ্বনি করছে। আমি জিজ্ঞাসা করেছি যে, তার বাপ-দাদাদের মধ্য কেউ বাদশাহ ছিলো কিনা? তুমি বলেছ না, ছিলো না। যদি তার বাপ-দাদাদের মধ্যে কেউ বাদশাহ থাকতো তবে আমি বলতাম যে, এই লোক বাপ-দাদার বাদশাহী দাবী করছে। আমি জিজ্ঞাসা করেছি যে, তিনি যা বলছেন, এর আগে তোমরা তাকে মিথ্যাবাদী হিসাবে অভিযুক্ত করেছিলে কিনা? তুমি বলেছো, না, কাজেই মানুষের ব্যাপারে যিনি মিথ্যা কথা বলেন না, তিনি সর্বশক্তিমান আল্লাহ তায়ালা সম্পর্কে মিথ্যা বলবেন এটা হতে পারে না। আমি একথাও জিজ্ঞাসা করেছি যে, বড়লোকেরা তার আনুগত্য করছে নাকি দুর্বল লোকেরা? তুমি বলেছ দুর্বল লোকেরা। প্রকৃতপক্ষে দুর্বল লোকেরাই পয়গাম্বরের আগে আনুগত্য করে। আমি জিজ্ঞাসা করেছি যে, তার ধর্ম-বিশ্বাস গ্রহণের পর কেউ ধর্মান্তরিত হয়েছে কিনা, তুমি বলেছো, না। প্রকৃতপক্ষে ঈমানের সজীবতা অন্তরে প্রবেশের পর এরকমই হয়ে থাকে। আমি জিজ্ঞাসা করেছি যে, তিনি তোমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেন কিনা। তুমি বলেছ, না। প্রকৃতপক্ষে পয়গাম্বর এরকমই হয়ে থাকেন। তারা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না, বিশ্বসঘাতকতা করেন না। আমি জিজ্ঞাসা করেছি যে, তিনি কি কি কাজের আদেশ দিয়ে থাকেন? তুমি বলেছো যে, তিনি তোমাদেরকে আল্লাহর এবাদাতের আদেশ করেন, তার সাথে কাউকে শরিক না করার আদেশ করেন, মূর্তিপূজা করতে নিষেধ করেন এবং নামায, সত্যবাদিতা, পরহেজগারি, পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার আদেশ দেন। তুমি যা কিছু বলেছো, যদি এসব সত্য হয়ে থাকে তবে তিনি খুব শীঘ্রেই আমার দুই পায়ের নীচের জায়গারও মালিক হয়ে যাবেন। আমি জানতাম যে, এই নবী আসবেন কিন্তু আমার ধারণা ছিলো না যে, তিনি তোমাদের মধ্য থেকেই আসবেন। আমি যদি তার কাছে পৌঁছার কষ্ট স্বীকার করতে সক্ষম হতাম, তবে তার কাছে থেকে তার দুই চরণ ধুয়ে দিতাম।
এরপর হিরাক্লিয়াস রাসূল (সাঃ) এর চিঠি চেয়ে নিয়ে পাঠ করলেন। হিরাক্লিয়াস চিঠি পড়া শেষ করার পরই সেখানে শোরগোল শুরু হলো এবং উচ্চস্বরে কথা শোনা গেলো। হিরাক্লিয়াস আবু সুফিয়ানদের ব্যাপারে আদেশ দিলেন, তাদের বাইরে বের করে দেয়া হলো। বাইরে এসে সঙ্গীদের আবু সুফিয়ান বলল, আবু কাবশার ১৬ পুত্রের ঘটনাতো বেশ সিরিয়াস হয়ে উঠেছে। ওকে তো দেখছি বনু আসফারের ১৭ অর্থাৎ রোমানদের বাদশাহও ভয় পায়।
এ চিঠির একটি প্রভাব এটাও ছিলো যে, সম্রাট হিরাক্লিয়াস রাসূল (সাঃ) -এর পত্র বাহক হযরত দেহইয়া কালবিকে (রা) বেশ কিছু ধন-সম্পদ ও মালামাল প্রদান করেন। হযরত দেহইয়া (রা) সেসব জিনিস নিয়ে মদীনায় ফেরার পথে হুসমা নামজ জায়গায় জোযাম গোত্রের কিছু লোক ডাকাতি করে সব কিছু নিয়ে যায়। মদীনায় পৌঁছার পর হযরত দেহইয়া (রা) নিজের বাড়ীতে না গিয়ে প্রথমে আল্লাহর রসূলের দরবারে গিয়ে সব কথা তাঁর কাছে ব্যক্ত করেন। সব শুনে রাসূল (সাঃ) হযরত যায়েদ ইবনে হারেসার (রা) নেতৃত্বে পাঁচশত সাহাবাকে হুসমা অভিযানে প্রেরণ করেন। হযরত যায়েদ (রা) জোযাম গোত্রের লোকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাদের বেশ কিছু লোককে হত্যা করেন। এরপর তাদের পশুপাল ও মহিলাদের মদীনায় হাঁকিয়ে নিয়ে আসেন। পশুপালের মধ্যে এক হাজার উট এবং পাঁচ হাজার বকরি ছিলো। বন্দীদের মধ্যে একশত নারী ও শিশু ছিলো।
রাসূল (সাঃ) এবং জোযাম গোত্রের মধ্যে আগে থেকেই সমঝোতা চুক্তি চলে আসছিলো। এ কারণে উক্ত গোত্রের একজন সর্দার যায়েদ ইবনে রেফায়া তড়িঘড়ি করে আল্লাহর রসূলের দরবারে গিয়ে প্রতিবাদ ও ফরিয়াদ জানান। যায়েদ ইবনে রেফায়া অনেক আগেই জোযাম গোত্রের বেশ কিছু লোকসহ ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। হযরত দেহইয়া কালবীর ওপর হামলা হলে তাঁরা তাকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। এ কারণে রাসূল (সাঃ) তাঁর প্রতিবাদ ও ফরিয়াদ গ্রহণ করেন এবং গনীমতের মাল বন্দীদের ফেরত দেন।
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
No comments :
Post a Comment