মরুর ফুল ১৬
মাদায়েন মেহরিনের জন্য সম্পূর্ণ নতুন পরিবেশ। এখানকার ভাষা ভিন্ন। মেহরিন যদিও ফারসী ভাষা জানে কিন্তু ছোটকাল থেকে সে আরবীতেই কথা বলত। এছাড়া দীর্ঘ দিন নানার বাড়ীতে থেকে কারো সাথে ফারসীতে কথা বলতে হয় নি। সেই কারণে ইরানী মেয়ে হওয়া সত্বেও ভাষা হিসেবে সে আরবীকে প্রাধান্য দিত। অনেক দিনের কষ্টের ভ্রমণ শেষে ওরা যখন মাদায়েনে পৌঁছুল তখন তারা পরিশ্রান্ত। প্রায় সবারই চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে। সকালে নদীর ওপাড় থেকে খালেকদুনের সেনাদের পক্ষ থেকে একজন দূত এল। দূতের গায়ে বেসামরিক পোষাক। বোঝা গেল সে গোপনে নদী পার হয়ে এখানে এসেছে। সে এসে খালেকদুনের স্ত্রীর সাথে দেখা করল। সব শুনে খালেকদুনের স্ত্রীর অবাক হল “কী? রাতে জায়েদকে ধরে নিয়ে গেছে?”“শুধু তাই নয় রাজকীয় বাহিনী বলেছে তাকে তারা হত্যা করবে”
খালেকদুনের স্ত্রী কিছুক্ষন মাথায় হাত দিয়ে বসে রইলেন। পাশের কামরা থেকে মেহরিন সব শুনল। মেহরিনের চোখেও পানি জমল। সে ভাবল, সব তার দোষ। নিঃস্ব জায়েদ না হয় তার মত রাজকীয় পরিবারের কাউকে পছন্দ করেছে কিন্তু এই সুযোগে জায়েদকে তাদের যেকোন উপায়ে মুক্তি দেয়া উচিৎ ছিল। আরব থেকে ইরানে আসার পথে তারা প্রায় এক মাস সময় পেয়েছিল। এই এক মাসের মধ্যে জায়েদকে পালানোর সুযোগ দিলেও জায়েদের জান বাঁচত। লোকটা যাই হোক না কেন দুইবার মেহরিনের ইজ্জত ও জান বাঁচিয়েছে। আরবের নিয়মানুযায়ী কেউ কারো জীবন বাঁচালে তার বিনিময়ে তাকে তার কথা রাখতে হয়। আরবের লোকজন এজন্য নিজের জিবনই দিয়ে দেয়। মেহরিনের মনে হল যে লোক দুইবার তার জীবন বাঁচিয়েছে তার জীবন বাঁচানোর দায়িত্ব মেহরিনের উপরেই বর্তায়।
জায়েদ মেহরিনকে পছন্দ করে জানার পরে মেহরিনের শরীরে আগুণ ধরে গিয়েছিল তাই দীর্ঘ এক মাস ভ্রমণের সময় সে একবারের জন্যও জায়েদের কাছাকাছি যায় নি। পুরো রাস্তায় সে নেকাব দিয়ে মুখ ঢেকে রেখেছিল যাতে জায়েদ তার চেহারা দেখতে না পারে। এছাড়া আরেকটা কারণ ছিল ইরানী সৈন্য। ইরানী সেনাদের মেহরিন ভাল করেই চিনে। এরা দিনে যুদ্ধ করে আর রাতে মদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। মাতাল অবস্থায় এদের দিয়ে সব কাজই সম্ভব। অবশ্য নিরাপত্তার জন্য মেহরিনের নানা বাড়ী থেকে বিশ জন চাকর ও দশ জন দাসী সাথে করে এনেছিল। প্রয়োজনের সময় এরাও অস্ত্র হাতে নিতে পারে।
মেহরিনের চোখের কোনায় যে পানি জমেছে জায়েদের কথা ভাবার পরে তা বন্যা হয়ে বের হল। সে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারল না। তার কক্ষে গিয়ে সে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল। সেই কক্ষের ভেতর যে তার ছোট বোন ছিল সেদিকে তার খেয়াল নেই। বোনের কান্না দেখে সে দৌড়ে মায়ের কাছে গেল “মা, আপু অনেক কান্নাকাটি করছে।”
খালেকদুনের স্ত্রীর চোখেও পানি। ছেলেটা কত ভাল ছিল। এই ছেলেকে যদি ওরা হত্যা করেই ফেলে তাহলে? এই ছেলেকে বাঁচিয়ে রাখা তাদের দায়িত্ব। তিনি রাণি শিরির দরবারে গেলেন।
রাণী শিরি সব শুনে অবাক হলেন। অনেকদিন পরে খালেকদুনের স্ত্রীর সাথে দেখা। দুই চারটা ভাল ভাল কথা বলবেন, বিয়ে নিয়ে আলাপ আলোচনা করবেন তা না কোথা থেকে এক বিপদ শুরু হল।
তিনি রাজকীয় বাহিনীর এক কমান্ডারকে তলব করলেন “কার আদেশে তোমরা নদীর ওপাড় থেকে খালেকদুনের বন্দীকে নিয়ে এসেছ?”
কমান্ডার আকাশ থেকে পড়লেন “আমিতো এমন কোন আদেশ দেই নি! তাহলে......” কমান্ডার আমতা আমতা করতে লাগলেন।
“তাহলে বসে আছ কেন জলদি খোঁজ লাগাও কে সে বন্দীকে নিয়ে এসেছে। আজ দুপুরের মধ্যে সেই বন্দীকে এখানে হাজির দেখতে চাই” ঝাঁঝালো কন্ঠে রাণির মতই আদেশ করলেন রাণি শিরি।
কমান্ডার কুর্ণিশ করে পারলে দৌড় দেন। কমান্ডার তার বাহিনীকে খোঁজ লাগাতে বললেন। বাহিনীর একজন নদীর ওপাড়ে গিয়ে খালেকদুনের সেনা অফিসারকে নিয়ে রাজকীয় ফৌজের অফিসে ঢুকলেন। রাজকীয় ফৌজের বেশিরভাগ অফিসার এখানে আছেন। এরা মূলত প্রাসাদের বাইরে কাজ করে। বাকীরা প্রাসাদ পাহারায় ব্যস্ত, ওদের পক্ষে প্রাসাদ থেকে বের হওয়া অসম্ভব।
“এদের মধ্যে কেউ ছিল না। গত রাতে অন্ধকারের মধ্যে ওনার চেহারা দেখে যেটুকু চিনেছি ওনার গালে একটা কাটা দাগ আছে। আর তার সাথে থাকা বাকী নয় জন সেনা তাঁবু থেকে দূরে ছিলেন। তাই ওদের কাউকে দেখিনি।”
“গালে কাটা দাগওয়ালা অফিসার এখানে একজনই ছিল” কক্ষে প্রবেশ করতে করতে রাজকীয় সেনার এক কর্মকর্তা বললেন “কিছুক্ষন আগে তার লাশ পাওয়া গেছে। সেই বন্দী তাকে হত্যা করে পালিয়েছে।”
কক্ষে কিছুক্ষন কেউ কোন কথা বলল না। এরপরে গুঞ্জন শুরু হল। কারণ রাজকীয় বাহিনীর দিকে গোটা মাদায়েনে কেউ চোখ তুলে তাকায় না। অথচ একটা আরব বন্দীর এত সাহস যে একজন রাজকীয় বাহিনীর অফিসারকে হত্যা করবে!
কমান্ডার “তাহলে বাকী সেনারা কী করছিল? শুনেছি তারা সংখ্যায় নয় জন ছিল। আর বন্দীর হাত মুখ বাঁধা ছিল। আর কারা সেই নয় সেনা?” কমান্ডার সেই নিহত অফিসারের অধীনে সব সেনাকে ডাকলেন।
অফিসারের অধীনে বিশ জন সেনা ছিল।
“তোমরা কারা গতকাল নদীর ওপাড়ে গিয়েছিলে?”
কেউ কোন শব্দ করছে না।
“স্বীকার না করলে সবাইকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হবে”
সেই নয় জন স্বীকার করল যে অফিসার তাদেরকে রাতে ডেকে নিয়ে ‘ব্যাক্তিগত’ কাজ করিয়েছেন। তাবে তারা এটাও বলল যে, নদী পার হওয়ার পরে তাদেরকে চলে যেতে বলা হয়। বন্দীকে নিয়ে অফিসার একাই চলে যায়।
কমান্ডার রাগে চিৎকার করল “এই নয় জনকে শাস্তি স্বরূপ রাজকীয় সেনাবাহিনী থেকে বের করে দিয়ে যুদ্ধের ময়দানে পাঠানো হোক। আজ বিকালে কাউকে মাদায়েনে দেখলে তার গর্দান যাবে।”
কমান্ডার তার চাকরি হারানোর চিন্তায় আছেন। রাণি শিরি কিসরার খুব ঘনিষ্ঠ। তিনি যদি কমান্ডারকে ‘ব্যার্থ’ হিসেবে দেখেন তাহলে রাজকীয় বাহিনীর চাকরিটা হারাতে হবে। খালেকদুনের সেনা অফিসার বলল “একজন লোকের সাথে কথা বলে দেখতে পারেন। গতকাল দুপুরে এক সেনা গোয়েন্দা অফিসার এসে বন্দীর ব্যপারে তথ্য নিয়েছিল। উনি হয়তো কিছু জানতে পারেন।”
কমান্ডার এবার অসহায় বোধ করল। কারণ রাজকীয় বাহিনীর সেমন নিরঙ্কুশ ক্ষমতা তেমনি সেনা গোয়েন্দা বাহিনীরও নিরঙ্কুশ ক্ষমতা। উভয় বাহিনী সরাসরি সম্রাট নিজে চালান। সেনা গোয়েন্দার কাউকে জিজ্ঞসাবাদ করতে গেলে সম্রাটের হুকুম লাগবে। তিনি রাণি শিরির দরবারে গেলেন। কমান্ডার ভেবে কুল পাচ্ছে না এক আরব বন্দী যে রোমান গোয়েন্দা ছিল তাকে নিয়ে এত রাণির এত টেনশনের কী আছে? অবশ্য যেহেতু তার একজন অফিসার খুন হয়েছে। এই খুনের সাথে এই বন্দী জড়িত। বন্দীর রহস্য উদ্ধার করতে পারলে খুনের রহস্যও উদ্ধার করা যাবে।
রাণি শিরি সেনা অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি নেয়ার জন্য সম্রাটের কাছে যেতেই কামরার পাহারাদার তাকে বাঁধা দিল “সম্রাট ব্যাস্ত রয়েছেন। ওনার সময় হলে আমি আপনাকে জানাব।”
সম্রাট এই মুহুর্তে এক সুন্দরী দাসী নিয়ে ব্যস্ত। রাণি শিরি নিজের বার্ধক্যের জন্য আফসোস করলেন। ইশ, যখন বয়স কম ছিল তিনি তখন সম্রাটের চোখের মণি ছিলেন। অবশ্য তিনি এখনো চোখের মণি। কিন্তু সেটা শুধু রাজ কার্যের বিভিন্ন পরামর্শের জন্য। কিন্তু দাসীর সাথে ‘ব্যাস্ত’ থাকা অবস্থায় রাণিদেরও প্রবেশ নিষেধ।
পর দিন সম্রাটের অনুমতি নিয়ে সেনা গোয়েন্দাকে জিজ্ঞাসা বাদ করা হলে আশানুরূপ কোন উত্তর পাওয়া যায় নি। তাকে বেশি জিজ্ঞাসা করেও লাভ নেই কারণ এই লোকটির কাজই হল সেনাবাহিনীর কেউ মাদায়েনে ঢুকলে তাদের গতি বিধি পর্যবেক্ষন করা। সে তার রুটিন মাফিক দায়িত্ব পালন করেছে।
এদিকে রাজকীয় বাহিনীর এক অফিসারের এক মৃত্যুর ফলে বাহিনীতে এক উত্তেজনার সৃষ্টি হল। তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাইল। কিন্তু বিচার করতে হলে সবার আগে সেই আরব বন্দীকে ধরতে হবে। কিন্তু সেই বন্দীই বা এখন কোথায়? মাদায়েনের অলিতে গলিতে সকল আরবের বাড়ী তল্লাশী করা হল- কিন্তু সেই আরবকে খুঁজে পাওয়া গেল না। সকল আরবকে বলা হল- নতুন কোন আরব যুবককে দেখলেই যেন রাজকীয় বাহিনীর যে কোন সদস্যকে অবহিত করা হয়। এদিকে সারা শহর জুড়ে রটে গেল গেল এক আরব বন্দী নিজেকে মুক্ত করে রাজকীয় বাহিনীর এক অফিসারকে হত্যা করেছে। তাকজে ধরিয়ে দিতে পারলে পাল পুরষ্কার পাওয়া যাবে। পুরষ্কারের লোভে সবাই সেই আরব যুবককে খুঁজতে লাগল।
শাহজাদী বিলকিস সেনা গোয়েন্দাকে কিছুদিন সাবধান থাকতে বললেন। বন্দী জায়েদের সাথে সে যেন দেখা করতে না যায়। কারণ শাহজাদী খবর পেয়েছেন সেই অফিসারের পেছনে রাজকীয় বাহিনী লোক লাগিয়েছেন কারণ তাদের অফিসার হত্যার জন্য তার হাত থাকা অস্বাভাবিক নয়।
খালেকদুনের স্ত্রী জায়েদের ব্যাপারটা নিয়ে প্রথম কয়েকদিন চিন্তা করেছেন- জায়েদের মত তার যদি একটা ছেলে থাকত। অবশ্য জায়েদ ওদের জন্য যা করেছে তা নিজের ছেলে ছাড়া আর কেউ করে না। দুই দিন দিন পরে মেহরিনের বিয়ের বিষয়টাই তার মনে মূখ্য বিষয় হিসেবে ঘুরপাক খেতে থাকল। মেহরিনের বিয়ে হলে তিনি রাজ পরিবারের সদস্য হতে পারবেন। এক সপ্তাহ পরে জায়েদের বিষয়টা তেমন আর গুরুত্ব থাকল না। কিন্তু দরজার আড়ালে মেহরিন জায়েদের জন্য গোপনে কাঁদত। কিন্তু সে কান্নায় শুধু অনুশোচনা ছিল নাকি অন্য কিছু ছিল তা জানা যায় নি।
এদিকে রাণি শিরি মেহরিনের মাকে তাগাদা দিতে লাগলেন তিনি যেন মেহরিনকে তার মহলে নিয়ে আসেন। ওনার পরিকল্পনা ছিল মেহরিন যেদিন মহলে আসবে সেই দিন তিনি শাহজাদা সোহরাবকেও মহলে ডাকবেন। দুই জনের মধ্যে পরিচয় করিয়ে দিতে চাচ্ছেন। তিনি নিশ্চিত এই মেয়েকে দেখলে শাহজাদা সোহরাব রাণি শিরির গোলাম হয়ে থাকবে।
কিন্তু লম্বা ভ্রমণ করে মেহরিনের চেহারা খারাপ হয়ে গেছে। খালেকদুনের স্ত্রী ভাবলেন আরো কিছুদিন থাকলে মেহরিনের চেহারায় একটা লাবণ্য ফিরে আসবে তখন না হয় রাণির মহলে যাওয়া যাবে। রানির মহলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতেই মেহরিনের নানার বাড়ী থেকে খবর এল- মুসলমানদের সাথে গাফতানীদের যুদ্ধ হয়েছে!
৬ হিজরির রবিউল আউয়াল মাসে জিকারাদ বা গাবা অভিযান পরিচালিত হয়। আবু কাতাদাহ নামের রাসূল (সাঃ) এর এক দাস সেই অভিযানে দারুণ দুঃসাহসের পরিচয় দান করেন।
হযরত রাসূলে কারীমের (সা) উটগুলো জিকারাদ নামক একটি পল্লীতে চরতো।
রাসূল (সাঃ) দাস রাবাহ ছিলেন সেই উটগুলোর দায়িত্বে। গাতফান গোত্রের কিছু লোক রাখালদের হত্যা করে উটগুলো লুট করে নিয়ে যায়। প্রখ্যাত সাহাবী হযরত সালামা ইবন আকওয়া (রাঃ) এ সংবাদ পেয়ে আরবের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে মদিনার দিকে মুখ করে শত্রুর আক্রমণের সতর্ক ধ্বনি ইয়া সাবাহাহ্! বলে তিনবার চিৎকার দেন। অন্য দিকে রাবাহকে দ্রুত রাসূল (সাঃ) এর নিকট পাঠিয়ে দিয়ে নিজে গাতফানী লুটেরাদের পেছনে ধাওয়া করেন।
হযরত রাসূলে কারীম (সা) তাঁকে সাহায্যের জন্য দ্রুত তিনজন অশ্বারোহীকে পাঠিয়ে দেন এবং তাঁদের পেছনে তিনি নিজেও বেরিয়ে পড়েন।
সালামা ইবন আকওয়া মদিনার সাহায্যের প্রতীক্ষায় ছিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি দেখতে পেলেন, আবু কাতাদাহ আল-আনসারী, আল-আখরাম, আল-আসাদী এবং তাঁদের পেছনে মিকদাদ আল-কিন্দি বাতাসের বেগে ঘোড়া ছুটিয়ে আসছেন।
এই অশ্বারোহীদের দেখে গাতফানীরা উট ফেলে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু আল-আখরাম, আল-আসাদির মধ্যে তখন শাহাদাতের তীব্র বাসনা কাজ করছে। তিনি সালামার নিষেধ অমান্য করে গাতফানীদের পিছে ধাওয়া করেন। এক পর্যায়ে আবদুর রহমান আল-আখরামের ঘোড়াটি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এমন সময় আবু কাতাদাহ এসে উপস্থিত হন এবং তিনি বর্শার এক খোঁচায় আবদুর রহমানকে হত্যা করেন। কেউ বলেন, এই জিকারাদ যুদ্ধে আবু কাতাদাহ যাকে হত্যা করেন তার নাম হাবিব ইবন উয়াইনা ইবন হিসন। তিনি হাবিবকে হত্যা করে নিজের চাদর দিয়ে লাশটি ঢেকে শত্রুর পেছনে আরও এগিয়ে যান। পেছনের লোকেরা যখন দেখতে পেল, আবু কাতাদাহর চাদর দিয়ে একটি লাশ ঢাকা তখন তারা মনে করলো, নিশ্চয়ই এ আবু কাতাদাহর লাশ। সাথে সাথে তারা ইন্নালিল্লাহ উচ্চারণ করলো। তারা নিজেরা বলাবলি করতে লাগলো: আবু কাতাদাহ নিহত হয়েছে। এ কথা শুনে রাসূল (সা) বললেন : আবু কাতাদাহ্ নয়; বরং আবু কাতাদাহর হাতে নিহত ব্যক্তির লাশ। সে একে হত্যা করে নিজের চাদর দিয়ে ঢেকে রেখে গেছে, যাতে তোমরা বুঝতে পার, এর ঘাতক সেই। আবু কাতাদাহ বলেন, জিকারাদের দিন অভিযান শেষে রাসূলুল্লাহর (সা) সাথে আমার দেখা হলে তিনি আমার দিকে তাকিয়ে দু’আ করেন : হে আল্লাহ! তুমি তার কেশ ও ত্বকে বরকত দাও। তার চেহারাকে কামিয়াব কর।
আমি বললাম : ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহ আপনার চেহারাও কামিয়াব করুন!
এ দিন তাঁর বীরত্ব ও সাহসিকতার বর্ণনা শুনে রাসূল (সা) মন্তব্য করেন : আবু কাতাদাহ আজ আমাদের সর্বোত্তম অশ্বারোহী।
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
No comments :
Post a Comment