মরুর ফুল ৪১
কোরায়শদের দোরগোড়ায়ঃরসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু সুফিয়ানের সামনে দিয়ে যাওয়ার পর হযরত আব্বাস (রা.) বললেন “আবু সুফিয়ান, এবার তুমি কওমের কাছে যাও।”
আবু সুফিয়ান দ্রুত মক্কায় গিয়ে পৌঁছলো এবং উচ্চ কন্ঠে বললো “হে কোরায়শরা, মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের কাছে এতো সৈন্য নিয়ে এসেছেন যে, মোকাবেলা করা অসম্ভব ব্যাপার। কাজেই যে ব্যক্তি আবু সুফিয়ানে ঘরে প্রবেশ করবে, সে নিরাপত্তা পাবে।”
একথা শুনে আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হেন্দ বিনতে ওতব উঠে দাঁড়িয়ে সামনে এসে আবু সুফিয়ানে গোঁফ নেড়ে বললো “তোমরা এই বুড়োকে মেরে ফেলো। খারাপ খবর নিয়ে আসা এই বুড়োর অকল্যাণ হোক।”
আবু সুফিয়ান বললেন “তোমাদের সর্বনাশ হোক। দেখো তোমাদের জীবন বাঁচানোর ব্যাপারে এই মেয়েলোক তোমাদের যেন ধোঁকায় না ফেলে। মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এতো বিরাট বাহিনী নিয়ে এসছেন যার মোকাবেলা করা কোনক্রমেই সম্ভব নয়। কাজেই, যারা আবু সুফিয়ানের ঘরে প্রবেশ করবে, তারা নিরাপদ।”
লোকেরা বললো “আল্লাহ তোমাকে ধ্বংস করুন। আমরা কয়জন তোমার ঘরে যেতে পারবো?”
আবু সুফিয়ান বললেন “যারা নিজের ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে রাখবে, তারাও নিরাপত্তা পাবে। যারা মসজিদে হারামে প্রবেশ করবে, তারাও নিরাপত্তা পাবে।”
একথা শুনে লোকেরা নিজেদের ঘর এবং মসজিদে হারাম অর্থাৎ কাবা ঘরের দিকে দৌড়াতে লাগলো। তবে মতলববাজ কোরাইশরা কিছু সংখ্যক মাস্তান জাতীয় উচ্ছৃঙ্খল লোককে লেলিয়ে দিয়ে বললো “তবে আমরা এদের সমেনে ঠেলে দিলাম। যদি কোরাইশরা কিছুটা সাফল্য লাভ করে, তবে আমরা এদের সাথে গিয়ে মিলিত হব। যদি এরা আহত হয়, তবে আমদের কাছে তারা যা কিছু চাইবে, আমরা তাই দেবো।”
মুসলমানদের সাথে লড়াই করতে কোরাইশদরে যেসব মাস্তান ও উচ্ছৃঙ্খল লোকদের প্রস্তুত করা হলো সেসব নির্বোধ লোকের নেতা মনোনীত করা হলো একরামা ইবনে আবু জেহেল, সফওয়ান ইবনে উমাইয়া এবং সোহায়েল ইবনে আমরকে। এ তিনজনের নেতৃত্বে একদল কোরাইশ খান্দামায় সমবেত হলো। এদের মধ্যে বনু বকর গোত্রের হাম্মাস ইবনে কায়েস নামে একজন লোকও ছিলো। এর আগে সে অস্ত্র মেরামতের কাজ করতো। একদিন নিজ অস্ত্র মেরামতের সময় তার স্ত্রী বললো “তোমার এ প্রস্তুতি কিসের গো?”
সে উত্তর দিল “হাম্মাস বললো, মোহাম্মদ এবং তার সঙ্গীদের মোকাবেলা করার প্রস্তুতি।” একথা শুনে স্ত্রী বললো “আল্লাহর শপথ, মোহাম্মদ এবং তার সঙ্গীদের শেষ করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়।” হাম্মাস বললো “আল্লাহর শপথ, আমি আশা করি যে, তাঁর কয়েকজন সঙ্গীকে আমি তোমার দাস হিসেবে হাযির করতে পারব। ওরা যদি আজ মোকাবেলার জন্যে আসে, তবে ওদের মোকাবেলার জন্যে আমার কোন অজুহাত থাকবে না। পূণাঙ্গ হাতিয়ার রয়েছে। ধারালো বর্শা, দু’ধারি তলোয়ার।” খান্দামার যুদ্ধে এ লোকটিও উপস্থিত হয়েছিলো।
যি-তুবায়
এদিকে রসূল রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাররাজ জাহরান থেকে রওয়ানা হয়ে যি-তুবায় পৌঁছলেন। এ সময়ে আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত মর্যাদার কারণে বিনয় ও কৃতজ্ঞতায় রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথা নীচু করে রেখেছিলেন। যি-তুবায় তিনি সৈন্য সমাবেশ করলেন। খালেদ ইবনে ওলীদকে নিজের ডানদিকে রাখলেন। এখানে আসলাম, সোলায়েম, গেফার, মোজাইনা এবং কয়েকটি আরব গোত্র ছিলো। খালেদ ইবনে ওলীদকে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিলেন, তিনি যেন মক্কার ঢালু এলাকায় প্রবেশ করেন। খালেদকে বললেন “যদি কোরাইশদের কেউ বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তবে তাকে হ্ত্যা করবে। এরপর তুমি সাফায় গিয়ে আমার সাথে দেখা করবে।”
হযরত যোবয়ের ইবনে আওয়ামকে বামদিকে রাখলেন। তাঁর হাতে ছিলো রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পতাকা। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আদেশ দিলেন, তিনি যেন মক্কার উঁচু এলাকা অর্থাৎ কোদায় প্রবেশ করেন এবং হাজুনে তাঁর দেয়া পতাকা স্থাপন করে তাঁর আগমন পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।
পদ ব্রজে যারা এসেছিলেন তাদের পরিচালনা দায়িত্ব পালন করছিলেন হযরত আবু ওবায়দা (রাঃ)। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে আদেশ দিলেন, তিনি যেন প্রান্তরের প্রান্তসীমার পথ অগ্রসর হন এবং মক্কায় তাঁরা অবতরণ করেন।
ইসলামী বাহিনীর মক্কায় প্রবেশঃ
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ পাওয়ার পর সেনাপতিরা নিজ নিজ সৈন্যদের নিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় চলে গেলেন।
হযরত খালেদ এবং তাঁর সঙ্গীদের পথে যেসব পৌত্তলিক আসছিলো, তাদের সাথে মোকাবেলা করে তাদের হত্যা করা হলো। হযরত খালেদের সাথী কারয ইবনে জাবের ফাহরি এবং খুনায়েস ইবনে খালেদ ইবনে রবিয়া শাহাদাত বরণ করেন। এরা দু’জন সেনাদল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অন্য রাস্তায় চলে গিয়েছিলেন। সেখানে তাদের হত্যা করা হয়। খান্দামায় হযরত খালেদ এবং তাঁর সঙ্গীদের সাথে উচ্ছৃঙ্খল কোরাইশরা মুখোমুখি হলো। কিছুক্ষণ উভয় পক্ষে সংঘর্ষ হলো। এতে ১২ জন পৌত্তলিক নিহত হলো। এ ঘটনায় কোরাইশদের মনে আতঙ্ক ছেয়ে গেলো। মুসলমানদের সাথে যুদ্ধ করতে সংকল্পবদ্ধ হাম্মাস ইবনে কয়েস দ্রুত ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো। তার স্ত্রীকে বললো “দরোজা বন্ধ রাখো, খুলবে না।”
তার স্ত্রী বললো “আপনার সেই বাগাড়ম্বর গেলো কোথায়?”
হাম্মাস ইবনে কয়েস যুদ্ধের ঘটনা বর্ণনা করল “হায়রে, সফওয়ান আর একরামা ছুটে পলায়ন করলো। নাঙ্গা তলোয়ার নিয়ে আমাদের অভ্যর্থনা করা হলো। সেই তলোয়ার গলা এবং মাথা এমনভাবে কাটছিলো যে, নিহতদের হৃদয় বিদারক চিৎকার এবং হৈহল্লা ছাড়া কিছুই শোনা যাচ্ছিল না।”
হযরত খালেদ (রা.) খান্দামায় শত্রুদের মোকাবেলার পর মক্কার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সাফায় গিয়ে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে মিলিত হলেন।
এদিকে হযরত যোবয়ের (রা.) সামনে অগ্রসর হয়ে হাজুল-এর মসজিদে ফতেহ-এর কাছে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পতাকা স্থাপন করলেন এবং তাঁর অবস্থানের জন্যে একটি কোব্বা তৈরী করলেন। এরপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যাওয়া পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করলেন।
বায়তুল্লায় প্রবেশ এবং মূর্তি অপসারণঃ
এরপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসার ও মোহজেরদের সঙ্গে নিয়ে মসজিদে হারাম-বায়তুল্লা
কাবাঘরের আশেপাশে এবং ছাদের ওপর সেই সময় তিনশত ষাটটি মূর্তি ছিলো। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর হাতের লাঠি দিয়ে সেসব মূর্তিকে গুঁতো দিচ্ছিলেন আর উচ্চারণ করছিলেন, সত্য এসছে, অসত্য চলে গেছে, নিশ্চয় অসত্য চলে যাওয়ার মতো।
পবিত্র কোরআনের এই আয়াতও তিনি উচ্চারণ করছিলেন, ‘সত্য এসেছে এবং অসত্যের চলাফেরা শেষ হয়ে গেছে।’
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উটনীর উপর বসে তওয়াফ করলেন এবং এহরাম অবস্থায় না থাকার কারণে শুধু তওয়াফই করলেন। তওয়াফ শেষ করার পর হযরত ওসমান ইবনে তালহা (রা.)-কে ডেকে তাঁর কাছে থেকে কাবা ঘরের চাবি নিলেন। এরপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশে কাবাঘর খোলা হলো। ভেতরে প্রবেশ করে তিনি দেখলেন অনেকগুলি ছবি। এ সব ছবির মধ্যে হযরত ইবরাহীম এবং হযরত ইসমাইলের ছবিও ছিলো। তাঁদের হাতে ছিলো ভাগ্য গননার তীর। এ দৃশ্য দেখে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন “আল্লাহ তায়ালা এই সব পৌত্তলিককে ধ্বংস করুন। আল্লাহর শপথ, এই দুই জন পয়গম্বর কখনোই গণনায়-এর তীর ব্যবহার করেননি।”
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাবাঘরের ভেতর কাঠের তৈরী একটি কবুতর ও দেখলেন। নিজ হাতে তিনি সেটি ভেঙ্গে ফেললেন। তাঁর নির্দেশে ছবিগুলো নষ্ট করে ফেলা হলো।
কাবাঘরে নামায আদায় এবং কোরাইশদের উদ্দেশ্যে ভাষণঃ
এরপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভেতর থেকে কাবাঘরের দরজা বন্ধ করে দিলেন। হযরত উসামা এবং হযরত বেলাল ভেতরেই ছিলেন। দরজা বন্ধ করে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দরজার মুখোমুখি দেয়ালের কাছে গিয়ে দেয়াল থেকে তিন হাত দূরে দাঁড়ালেন। এ সময় দুটি খাম্বা ছিলো বাম দিকে। একটি খাম্বা ছিলো ডানদিকে। তিনটি খাম্বা ছিলো পেছনে। সেই সময়ে কাবাঘরে ছয়টি খাম্বা বা খুঁটি ছিলো। এরপর তিনি সেখানে নামায আদায় করলেন। নামায শেষে তিনি কাবা ঘরের ভেতরের অংশ ঘুরলেন। সকল অংশে তকবীর এবং তাওহীদের বাণী উচ্চারণ করলেন। এরপর পুনরায় কাবা ঘরের দরজা খুলে দিলেন। কোরাইশরা সামনে অর্থাৎ মসজিদে হারামে ভিড় করে দাঁড়িয়েছিলো। তারা অপেক্ষা করছিলো যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কী করেন। দু’হাতে দরজার দুই পাল্লা ধরে তিনি কোরাইশদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। সেই ভাষণে তিনি বললেন, ‘আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নেই। তিনি এক ও অদ্বিতীয়, তাঁর কোন শরীক নেই। তিনি তাঁর ওয়াদা সত্য করে দেখিয়েছেন। তাঁর বান্দাদের মাধ্যমে তিনি একাই সকল বিরুদ্ধে শক্তিকে পরাজিত করেছেন। শোনো, কাবাঘরের তত্ত্বাবধান এবং হাজীদের পানি পান করানো ছাড়া অন্য সকল সম্মান বা সাফল্য আমার এই দুই পায়ের নীচে। মনে রেখো, যে কোন রকমের হত্যাকান্ডের দায়িত্ব বা ক্ষতিপূরণ একশত উট। এর মধ্যে চল্লিশটি উট হতে গর্ভবতী।
হে কোরাইশরা, আল্লাহ তায়ালা তোমাদের মধ্যে থেকে জাহেলিয়াত এবং পিতা ও পিতামহের অহংকার নিঃশেষ করে দিয়েছেন। সকল মানুষ আদমের সন্তান আর আদম মাটি থেকে তৈরী।”
এরপর তিনি এই আয়াত তেলাওয়াত করলেন “হে মানুষ, আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী থেকে। পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে করে, তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পার। তোমদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সেই অধিক মর্যাদা সম্পন্ন, যে অধিক মোত্তাকী। আল্লাহ সবকিছু জানেন, সমস্ত খবর রাখেন।”
এরপর তিনি বললেন “হে কোরাইশরা, তোমাদের ধারনা কী? আমি তোমাদের সাথে কেমন ব্যবহার করবো?
সবাই বললো “ভালো ব্যবহার করবেন, এটাই আমদের ধারণা। আপনি দয়ালু। দয়ালু ভাইয়ের পুত্র।”
এরপর তিনি বলেন “তাহলে আমি তোমাদেরকে সেই কথাই বলছি, যে কথা হযরত ইউসুফ (আঃ) তাঁর ভাইদের বলেছিলেন, ‘লা তাছরিবা আলাইকুমুল ইয়াওমা।’ আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। তোমরা সবাই মুক্ত।”
কাবাঘেরের চাবিঃ
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরপর মসজিদে হারামে বসলেন। হযরত আলীর হাতে ছিলো কাবাঘরের চাবি। তিনি বললেন “হে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, হাজীদের পানি পান করানোর মর্যাদার পাশাপাশি কাবাঘরের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বও আমাদের ওপর ন্যস্ত করুন। আল্লাহ তায়ালা আপনার ওপর রহমত করুন।”
অন্য এক বর্ণনা অনুযায়ী এই আবেদন হযরত আব্বাস জানিয়েছিলেন। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন “ওসমান ইবনে তালহা কোথায়?” তাঁকে ডাকা হলো। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন “ওসমান এই নাও চাবি। আজকের দিন হচ্ছে আনুগত্যের দিন। তোমাদের কাছ থেকে এ চাবি সেই কেড়ে নেবে যে যালেম। হে ওসমান (রাঃ), আল্লাহ তায়ালা তোমাদেরকে তার ঘরের তত্ত্বাধায়ক নিযুক্ত করেছেন। কাজেই রায়তুল্লাহ থেকে যা কিছু পাও, তা ভক্ষণ করবে।”
কাবার ছাদে বেলালের আযানঃ
নামাযের সময় হয়ে গিয়েছিলো। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেলালকে কাবার ছাদে উঠে আযান দেয়ার আদেশ দিলেন। সে সময় আবু সুফিয়ান ইবনে হরব, আত্তাব ইবনে আছিদ এবং হাবেছ ইবনে হেশাম কাবার আঙ্গিনায় বসেছিলো। সেখানে অন্য কেউ ছিলো না। আত্তাব বললো “আল্লাহ তায়ালা আছিদকে এ মর্যাদা দিয়েছেন যে, তাকে এই শুনতে হয়নি। নতুবা তাকে এক অপ্রীতিকর জিনিস শুনতে হতো।” একথা শুনে হারেস বললো “শোনো, আল্লাহর শপথ, যদি আমি শুনতে পারি যে, তিনি সত্য তবে তার আনুগত্যকারী হয়ে যাব।”
আবু সুফিয়ান বললেন “দেখো, আমি কিছু বলব না। যদি কিছু বলি আল্লাহর শপথ, তবে এই পাথরের টুকরোগুলো ও আমার সম্পর্কে খবর দেবে।” এরপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের সামনে হাযির হয়ে বললেন “এই মাত্র তোমরা যা বলেছ, আমি সব জানি।” এরপর তিনি তাদের কথা তাদের শোনালেন। এ বিস্ময়কর ঘটনায় হারেছ এবং আত্তাব বললেন “আমরা সাক্ষ্য দিতেছি যে, আপনি আল্লাহর রসূল। আল্লাহর শপথ, আমাদের কথা শোনার মতো কেউ আমাদের সঙ্গে ছিলো না। আমরা বলছি যে, আপনাকে আমাদের কথা জানিয়ে দেয়া হয়েছে।”
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
No comments :
Post a Comment